যে যতই সমালোচনা করুক ডঃ ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংক আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে
সত্যই এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে এবং অবশ্যই এর অনেক দুঃখজনক দিক আছে।
ডঃ ইউনুস ভুল করেছিলেন দেশে রাজনীতি করতে যেয়ে, নোবেল পেয়েছেন তাই বলে
বাঙ্গালী এতটা আবেগপ্রবণ নয় তাঁকে শুধু নোবেল পাওয়ার জন্য জাতীয় নেতা করে
ফেলবে । তিনি একাজটি করে খামাখা একটি “ফো প্যাঁ” করলেন যাই হোক তিনি ভুল বুঝতে
পেরে দ্রুত সরে আসলেন। কিন্তু ডঃ ইউনুস কোথায় পা দিয়েছিলেন বুঝতে পারেননি।
গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্য সবচাইতে প্রতি-হিংসাপরায়ণ রাজনীতি চর্চা করা হয়
আমাদেরর দেশে । তিনি সরে আসলেও তাঁকে “শিক্ষা” দেবার ফন্দি আটে আমাদের দেশের
রাজনীতিবিদেরা। তারা ফাঁক খুঁজতে থাকেন। পেয়েও যান, যা নিয়ে এতদিন কেউ মাথা
ঘামায়নি বেশ কয়েকবছর চলে যাবার পরও; সেই "বয়সের" কথা বলে থাকে বিদায় করা
হল । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুঝতে পারেননি তিনি একটি দুর্বল দেশের প্রধান
মন্ত্রী এবং যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-মন্ত্রী পরিষদের
সদস্যদের সাথে একটা বৈঠক করতে তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলোর সরকারকে লক্ষ লক্ষ
ডলার লবিং এর পেছনে করতে ব্যয় করতে হয় সেখানে ডঃ ইউনুস প্রায়ই তাদের সাথে
বৈঠক করেন এবং ওনাদের অনেকই তার ব্যক্তিগত বন্ধু। ডঃ ইউনুসকে সরিয়ে আক্ষরিক
অর্থেই শেখ হাসিনার সরকার পশ্চিমাদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। ফলরূপ
যুক্তরাষ্ট্রে প্রধান মন্ত্রীর বিভিন্ন কারণে হেয় হওয়া কেননা তিনি ক্লিনটন বন্ধুকে সরিয়েছেন। ডঃ ইউনুসের দেশে যতটা না পরিচয়,
পশ্চিমে তার থেকে বেশি পরিচয়। আমরা অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হলে হয়ত
পশ্চিমারা ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব এবং রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আলাদাই রাখত কিন্তু
আমরা তা নয় । প্রধান মন্ত্রী হাসিনাও একটি “ফো প্যাঁ” করলেন।
এখন আসা যাক বিশ্বের সবচাইতে প্রভাবশালী দুটো আর্থিক প্রতিষ্ঠান “ওয়ার্ল্ড
ব্যাংক” এবং “আই এম এফ” এর ব্যাপারে; জাতিসংঘের স্থায়ী পরিসদের মত এখানেও
বিশ্ব মোড়লগণ অলিখিত পারস্পরিক বোঝাপড়া করে রেখেছেন। “আই এম এফ” এর প্রধান
“ম্যানেজিং ডিরেক্টর / ব্যবস্থাপনা পরিচালক” নির্বাচিত হন কোন ইউরোপীয়
ইউনিয়নভুক্ত দেশ হতে এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এর প্রধান “সভাপতি / প্রেসিডেন্ট”
নির্বাচিত হন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতে। এটাই হয়ে আসছে।এটা আইন না শুধই
সমঝোতা এটা ভাবা বালখিল্যতা যুক্তরাষ্ট্র ওয়ার্ল্ড ব্যাংকরে মত এত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব হাতছাড়া করবে।
সুতরাং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতার সাথে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের
প্রেসিডেন্ট হাবার প্রস্তাবনা "নাটক" এবং ডঃ ইউনুসের প্রজ্ঞার সাথে ধন্যবাদ
জ্ঞাপনের মাধ্যমে তা প্রত্যাখ্যান । পশ্চিমারা খুশি তাদের প্রিয় মানুষের নিজদেশে সম্মান ফিরে পাওয়ায়। আমরা
খুশি আন্তর্জাতিক ভাবে আমাদের দেশের সবচাইতে পরিচিত মানুষদের একজনের সাথে
সরকার প্রধানের মনমালিন্যের অবসান হওয়াতে। এ যেন কোন আন্তর্জাতিক ঘটনার উপর নির্মিত থ্রিলার মুভির বাস্তব রূপায়ন এবং আক্ষরিক অর্থেই কূটনৈতিক নাটক পেছনের ঘটনা সাধারণ মানুষদের আড়ালেই থাকে এবং কোন পক্ষই প্রকাশ করতে চায়না । সবাই খুশি। উইন উইন সিচুয়েশনের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ।
--------------------------------------------------XXXXXXXXXXXX-----------------------------------------
প্রবন্ধটি ০৫ ই মার্চ, ২০১১ সালে সমহোয়্যার ইন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।
No comments:
Post a Comment