Sunday, October 28, 2012

ওবামার কৌতুকপূর্ণ ভাষণ B-) হোয়াইট হাউজ সংবাদদাতাদের সম্মানে সান্ধ্যভোজনে - ২০১২




ভাষণটি এক দিক হতে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ব্লগারদের সাংবাদিকতা জগতের অংশ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। যদিও অনেক আগে হতেই ব্লগ, ব্লগিং এবং ব্লগার পৃথিবীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং সংবাদের সক্রিয় অংশ।

ধন্যবাদ। সবাইকে শুভ সন্ধ্যা। আজ আমি সত্যিই খুব আনন্দিত, খানিকটা শিহরিতও বটে, হোয়াইট হাউজ সাংবাদিক সন্ধ্যায় আসতে পেরে (ডিনার)। মহান সম্মেলন। তবে ইতিমধ্যে হাস্যরসে এবং শোরগোল পরে গিয়েছে। সত্যিই অন্যরকম আজকের সন্ধ্যা....

চাক টড, আপনাকে সত্যিই ভালোবাসি ভাই। “গ্লি”র অনেক কুশলীর উপস্থিতি দেখে আমি খুবই আনন্দিত। জিমি কিমেল, আপনার উপস্থিতি আমাদের জন্য আসলেই খুবই সম্মানের।

প্রিয় দেশবাসী, আমরা আজ এক ঐতিহাসিক বর্ষপূর্তিতে মিলিত হয়েছি। গত বছর, এই সপ্তাহান্তে, পৃথিবীর অন্যতম এক কুখ্যাত ব্যক্তির বিচার করতে সক্ষম হয়েছিলাম ( ওসামা বিন লাদেন ) । এখন, এই বছর নির্বাচন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে আমরা আবার মিলিত হলাম। আমাকে এক্সেলর্ড বলেছেন, আমেরিকান জনগণের সামনে নিজেকে আরও নতুন ভাবে পরিচিত করার এটা এক বড় সুযোগ। তাই আজ রাতে আমি আবার আমার পরিচয় দিতে চাই; আমি বারাক ওবামা, আমার মা ক্যানসাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বাবা কেনিয়াতে জন্মেছিলেন এবং আমি হাউয়াইতে। ( প্রতিপক্ষ এক ব্যাক্তি তাঁর জন্ম পরিচয় ধোঁয়াশা দাবী করার পরিপ্রেক্ষিতে বলা )

২০০৯ সালে কতগুলো বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। কেউ কেউ বলতে পারেন আমি আমার পূর্বসূরিকে অতিরিক্ত দোষারোপ করতাম, কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবেনা, এই ঐতিহ্য জর্জ বুশই শুরু করেছিলেন। ওই সময় হতেই কংগ্রেস এবং আমার মাঝে কিছু মতবিরোধ ছিল, যদিও আমি কখনো সস্তা খেলা খেলিনি এবং সবসময় মার্জিত থাকার চেষ্টা করেছি। তাদের সকলকে (কংগ্রেস সদস্য) সেজন্য ধন্যবাদ, এই সম্মেলনকে বেআইনি ঘোষণা করে কোন আইন পাশ করার জন্য, শত কর্ম-ব্যস্ততার মাঝে তারা বিশেষ কোন সময় বের করেননি ।

অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও অনেক কিছুই বদলেছে। চার বছর আগে এমন সময় দলের মনোনয়ন পাবার প্রাথমিক ভোট যুদ্ধে হিলারি ক্লিনটনের সাথে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছিল। চার বছর পর তিনিই মাতাল অবস্থায় আমাকে এসএমএস করেন কার্তাঙ্গা শহর হতে। :P :P :P :P (সিক্রেট সার্ভিস যৌন কেলেঙ্কারির সংবাদ মেসেজের মাধ্যমে জানানো, ওই সময় হিলারি এক ক্লাবে তাঁর অধিনস্ত এক কর্মকর্তার জন্মদিনের পার্টিতে ছিলেন )

যাইহোক, আজ সন্ধ্যায় হিল্টনের বিশাল এই জমকাল বলরুমে আসতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত; যদিও মিট রমনি বলতে পারেন চলনসই সাধারণ মানের সভাস্থল ( মিট রম্নি অনেক ধনাঢ্য এবং সাবেক কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ)। আমি বলতে চাচ্ছিলাম, আজ এখানে উপস্থিত সুবেশী ভদ্রলোক এবং ভদ্রমহিলা সেই সঙ্গে অবশ্যই উন্নতমানের ওয়াইন এবং উপভোগ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আসলেই হালকা লাগছে কেননা আজ জন-প্রশাসনিক সভা নয়। অবিশ্বাস্য, মর্ম-বিদেরাও বলতে পারবেননা তাদের মনে কি প্রশ্নের উদয় হচ্ছে। ( কিছুদিন আগে জন-প্রশাসনিক সভায় অতিরিক্ত খরচের কারণে আইনসভায় তাদের জবাবদিহি করতে হয়েছিল)

হোয়াইট হাউস সাংবাদিক সন্ধ্যা ওয়াশিংটন ডিসির প্রম হিসেবে বিখ্যাত। রাজনৈতিক সাংবাদিক মহলে এটি আসলে এই নামেই পরিচিত, কেননা তাদের আসল প্রমে যাওয়ার সুযোগই হয়না (প্রম = একপ্রকার অনুষ্ঠান)। আজ সন্ধ্যার সঞ্চালক হলেন জিমি কিমেল। আজকের জন্য তিনিই যথোপযুক্ত...... কেননা বেশিরভাগ উপস্থিত দর্শকই তাঁর আওতায়, যারা রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। জিমি “ম্যান শো” এর মাধ্যমে তাঁর যাত্রা শুরু করেন। ওয়াশিংটনে এটা গর্ভনিরোধ বিষয়ক কংগ্রেসিও শুনানি হিসেবে পরিচিত।

আজ সাংবাদিক সমাজের অনেকই উপস্থিত। হাফটিংটন পোষ্ট কে পুলিতজার পুরস্কার পাবার জন্য অভিনন্দন না দিলে সত্যিই ভুল হয়ে যাবে। আরিয়ানা, আপনারা যোগ্যতাবলেই তা পেয়েছেন। হাফপো এর মত, প্রায় প্রতিদিনই তারা কড়া কড়া সাংবাদ পরিবেশন করেন যা কেউই করেনা। তাদের জন্য আন্তরিক হাততালি। তাদের সংবাদ পড়ার জন্য অর্থও পরিশোধ করতে হয়না, সুন্দর ব্যবসায়িক মডেলও বটে।

সারাহ পোলিনও তাঁর আগের জায়গায় ফিরে গিয়েছেন, অতিথি হিসেবে “টু ডেইজ শো” এর সঞ্চালকের ভূমিকায় কাজ করছেন। আমার একটা নিতি বাক্য মনে পরে যাচ্ছে, হকি মা এবং ষাঁড়ের মধ্য পার্থক্য শুধু তাদের স্বাদের মধ্যই। সাথে সামান্য সস হলে মন্দ হয়না। (সারাহ পলিন এক সময় টিভি এঙ্কর ছিলেন)

এখানে অনেকই আশা করছেন আমি যেন আমার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী নিউট গিংরিচ কে নিয়ে কিছু বলি। নিউট এখনো সময় আছে (নিউটের আসলে নির্বাচিত হবার কোন আশাই নেই)। কিন্তু আমি এমন করবোনা, আমি কোন রিপাবলিকান প্রার্থীকে আক্রমণ করবোনা। মিট রমনিকেই ধরুন, আমাদের মধ্য অনেক মিলই আছে। আমরা দুজনই মনে করি আমাদের স্ত্রী আমাদের অর্ধাঙ্গিনী, জনমত আরও এককাঠি সরেস, আমেরিকার জনগণও তাই মনে করে। আমাদের দুজনেরই হার্ভাডের ডিগ্রী আছে; আমার একটা এবং তাঁর দুটো। আহ, কতইনা উন্নাসিকতা ।

এটাও সত্য, আমাদের মধ্য পার্থক্যও আছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর নির্বাচনী প্রচার দল আমার সমালোচনা করে বলেছেন আমি নাকি জিমি ফ্যাল্কনের শোতে অযথা সময়ক্ষেপণ করেছি। আমার মনে হছে মিট রম্নি আসলে মারাত্মক ভাবে রাগান্বিত হয়ে গিয়েছিলেন, বোধয় তিনি তাঁর নির্বাচনী কর্মকর্তাদের একই সময়ের “মার্ক গ্রিফিন শো” তে ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। তবে আমার মনে হচ্ছে তিনি আগের-দিন নিয়ে সন্তুষ্ট, কয়েক ঘণ্টা ধরে তিনি ভুখা খেলা উপভোগ করেছেন........ আপনাদের অনেকেই তা দেখেছেন। এটার কিছু মানুষকে নিয়ে একটি সিনেমা, যার চরিত্র গুলো কিছু ধনী স্পন্সর জোগাড় করতে সমর্থ হয় এবং পরে একজন আরেকজনকে আক্রমণ করে, শেষ এক জন প্রতিযোগী বাকি থাকা পর্যন্ত। ওই ভুখা খেলা আমি দেখিনি, আমার জন্য আসলে ওই শ্রেণী সংগ্রাম অপর্যাপ্ত। (একটা টিভি কমার্সিয়ালকে ব্যাঙ্গ)

নিঃসন্দেহে অনেকই নোংরা রাজনীতি এবং নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন, ভাগ্য-ভালো আমরা সকলেই বিশ্বাস করি পরিবারকে কখনই এসবে আনা যাবেনা । যদিও সারমেয়কুল মনে হচ্ছে খেলারই অংশ। দু দলেরই নির্বাচন প্রচারণায় অনেক মজা হয় যদিও কিছুদিন আগের একটা প্রচারণা দেখে মনে হলো আসলেই সীমা অতিক্রম করা হয়েছে। আমি জানি গভর্নর রম্নি বলবেন তাঁর নিজের অনেক সমর্থকদের উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নেই...... ( উক্ত কমার্সিয়ালে দাবী করা হয়েছে, ওবামা তাঁর পোষা কুকুরকে নির্বাচনী প্রচারনায় নিয়ে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কষ্ট দিচ্ছেন)

ওটা আসলেই রুক্ষ....... যদিও আমার সৎ পিতা আমাকে প্রায়ই একটি কথা বলতেন, দুনিয়াতে আসলে এমন অনেক লোক আছে যারা বেশি চেঁচামেচি করলেও ভেতরে একেবারেই ফাঁপা :D :D :D :D

এখন আমি যদি পুনরায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হই, আমাকে বলতে দেন...... আমাকে আমার ষড়যন্ত্র-মনস্ক বন্ধুদের কিছু বলতে দেন, যারা মনে করেন আমি আজকে কোন গোপন বিষয়ের অবমুক্ত করতে যাচ্ছি। আপনারা আসলেই ধরতে পেরেছেন। আমাকে সেই গোপন বিষয়ের সারমর্ম বলতে অনুমতি প্রদান করুন।

প্রথম মেয়াদে আমি আল গ্রিন গানটি গাইতাম; দ্বিতীয় মেয়াদে আমি ইয়ং জিজি গেতে থাকব।
হ্যাঁ মিশেল সম্মতি দিয়েছেন আমি আসলে তাকেও গানটি মাঝে মাঝে শুনাই..........

প্রথম মেয়াদে আমরা ইরাক যুদ্ধ বন্ধ করেছি; দ্বিতীয় মেয়াদে আমি বড়দিনের যুদ্ধ ঘোষণা করব। প্রথম মেয়াদে আমরা একটা নীতি বাদ দিয়েছি যার নাম “ডোন্ট আস্ক ডোন্ট টেল” দ্বিতীয় মেয়াদে আমরা এটার পরিবর্তে আরেকটা নীতি গ্রহণ করব যার নাম “ইটস রেইনিং ম্যান”। প্রথম মেয়াদে আমরা স্বাস্থ্য সেবা বিল পাশ করেছি, মনে হয় দ্বিতীয় মেয়াদেও তাই করব। (সমকামী এবং গণস্বাস্থ্য বিষয়ক)

আমি আজকে কিছু সিরিয়াস কথা বলেই শেষ করতে চাই। পরবর্তী জানুয়ারিতে যে ব্যক্তিই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য শপথ নেন, তাকে আসলেই ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে। তবে সেই সঙ্গে তিনি এক মহান ঐতিহ্যের অংশীদার হয়ে যাবেন যা আসলে ওই চ্যালেঞ্জ হতেও বড়। সেই মহান ঐতিহ্য গুলোরই একটি আজ এই মুহূর্তের প্রতিনিধিত্ব করছে; মুক্ত সাংবাদিকতা, যারা তদন্ত এবং সমালোচনা করতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রশ্ন করতে ভয় পাননা। ওই মহান দায়িত্ব পালন করার সময় আসলেই আপনাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।

আজ রাতে আমি মহান সাংবাদিক এন্থনি শহীদ এবং মেরী কলভিনকে স্মরণ করছি, খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংবাদ উন্মোচন করতে যেয়ে যাদের চূড়ান্ত মূল্য দিতে হয়েছে। ব্লগার কিংবা সংবাদ উপস্থাপক হউন অথবা আপনি দেশে থেকে কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন কিংবা বিদেশের মাটিতে অত্যন্ত বিপদের মধ্য কাজ করেন আপনাদের সকলের প্রতি আমার অগাধ সম্মান এবং মুগ্ধতা রইল। আমি জানি মাঝেমধ্যে আপনারা আমাকে কঠিন মুহূর্তের মুখোমুখি করেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি প্রতিদান দিতে পছন্দ করি.... কিন্তু আমি কখনো ভুলে যাইনা আমাদের দেশ আপনাদের উপর অনেকাংশেই নির্ভর করে। আমি বিশ্বাস করি আপনারা সবাই আমাদের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং আমাদের জীবনযাত্রা রক্ষার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যান।

আমি এখন কতগুলো কথা খোলাখুলি ভাবে বলতে চাই, আমি আজকের সন্ধ্যায় আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। আসলে আমার আরও অনেক বিষয় প্রস্তুত করা প্রয়োজন ছিল, তবে আমাকে সিক্রেট সার্ভিসের নতুন নিয়ম কানুনের ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে হয়, তাদের তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে কিনা। ( কলাম্বিয়াতে যৌন কেলেঙ্কারির পরিপ্রেক্ষিতে সিক্রেট সার্ভিসের নতুন নিয়ম কানুন নিয়ে কৌতুক)। =p~ =p~ =p~ =p~

ধন্যবাদ; সবাইকে ধন্যবাদ :)

মূল ভাষণ - ইংরেজী:

মূল ভিডিও:





অনুবাদিত, পরিমার্জিত, পরিশীলিত। সঠিকভাবে সম্পাদিত হয়নি। বানান কিংবা ব্যাকরণ ভুলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কাম্য।

মূল ভাষণটি সম্পূর্ণ ভাবেই ভাবগাম্ভীর্যতা বিবর্জিত কথ্য ভাষায় দেয়া। কতগুলো শব্দের আক্ষরিক বাংলাই নেই কেননা ওটা সম্পুর্ন ভাবে কথ্য। যাই হোক বন্ধনীর মাধ্যমে মোটা হরফে কিছু ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

যারা যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন প্রচলিত শহুরে সংস্কৃতি, নাগরিক কথন এবং প্রাত্যহিক জীবনযাপনের সাথে পরিচিত নন তাদের অনেক বিষয় অন্যরকম এবং অদ্ভুত মনে হবে যেমন - slow jamming, prom, hockey mom, it's rainning man। আমাদের দেশে যেমন তৃতীয় মাত্রা, লাল গোলাপ, রাজপথ, পল্টন ময়দান, ভাদা, রাজাকার, ট্রাম্প কার্ড, তৃতীয় শক্তি, হাওয়া ভবন, উপ্রি আয়, বাকশাল, ছাইয়া ইত্যাদি প্রাত্যহিক নাগরিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গিয়েছে তেমন।

 

No comments:

Post a Comment