Sunday, October 28, 2012

নোবেল পুরুস্কারের সাতকাহন..........





যাদের নোবেল পুরস্কার না দিতে পেরে নোবেল পুরস্কার নিজেই বিব্রতঃ


মহাত্মা গান্ধীঃ পাঁচ বার মনোনীত হয়েছেন। ১৯৪৯ সালে হঠাত হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হলে নোবেল কমিটির টনক নড়ে, একটু বেশিই দেরি হয়ে গিয়েছিল। ১৯৪৯ সালে অন্য অনেকে পাবার যোগ্য হলেও ওই বছর শান্তিতে পুরস্কার কাওকেই দেওয়া হয়নি। কারণ নোবেল কমিটি সত্যি বিব্রত হয়ে গিয়েছিল।

নিকোলাস টেসলাঃ যারা তড়িৎ প্রকৌশল কিংবা পদার্থ বিজ্ঞানে পড়ালেখা করেছেন তারা জানেন তাঁর কথা। গোটা আধুনিক প্রাক্টিক্যাল পাওয়ার এবং ট্রান্সমিশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভিত্তি তিনি করে গিয়েছেন। তিনি শুধু উদ্ভাবক ছিলেননা একাধারে বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীও ছিলেন। তাঁর করে যাওয়া পাওয়ার ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি, শুধু উন্নয়ন হয়েছে। সেই সাথে তিনি আক্ষরিক আর্থেই রেডিওর আবিষ্কারক।

লিও টলস্তয়ঃ ওয়ার এন্ড পিস খ্যাত বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক এবং সম্ভবত আজ পর্যন্ত জন্ম নেওয়া শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক।

মার্ক টোয়াইনঃ আধুনিক আমেরিকান উপন্যাসের পুরোধা যেমন বঙ্কিম চন্দ্র বাংলা উপন্যাসের। বিশ্বরে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক এবং ছোট গল্পকার। খুব কম শিক্ষিত মানুষই আছেন যারা তার বিখ্যাত শিশুতোষ হাকালব্যারী ফিন কিংবা টমসয়ার পড়েননি।

ডিমিত্রি মেনদেলেভঃ মেন্ডেলেফ পিরিয়ডিক টেবিলকে এমনভাবে সংশোধন করেছেন যেন যেকোনো অনাবিস্কৃত মৌল পদার্থের মৌলিক বৈশিষ্ট্যর ধারনা পাওয়া যায়। তিনি যেসব ঘর খালি রেখেছিলেন সেসব ঘর এখন পূর্ণ, এখনো একেবারে একবিংশ শতাব্দীতে আবিস্কৃত অনেক মৌল কয়েকটি ঘর ফাকা রেখে পরে বসানো হয়েছে। পিরিয়ডিক টেবিল আক্ষরিক অর্থেই রসায়ন গবেষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। নোবেল কমিটি ওই সময় এর গুরুত্ব টের পায়নি।

আয়ালবার্ট স্কার্টজঃ গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া বিধ্বংসী বিশেষত টিউবারকোলসিস রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কারক। এর আগের আবিষ্কৃত পেনিসিলিন শুধু গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী ছিল।

লইস মেইটনারঃ নিউক্লিয়ার ফিসনে গবেষক, যিনি প্রস্তাবনা করেছিলেন নিউক্লিয়ার ফিসনের সময় হারানো ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

গিলবার্ট লুইসঃ কভ্লেন্ট বন্ড সহ আরো অনেক কিছুর আবিষ্কারক, বহুবার বার মনোনীত কিন্তু পুরস্কার পাননি।

পুরস্কার পাননি তবে তাদের গবেষণার উপর ভিত্তি করে অন্যরা পেয়েছেন পরবর্তীতেঃ

সত্যন্দ্রতাথ বোসঃ ১৯২০ বোস আইস্টাইন তত্ত্বের যৌথ-আবিষ্কারক । ২০০১ সালে এটার উপর গবেষণা করার কারণে অন্যদের পুরুস্কৃত করা হয়।

ডগ্লাস প্যাশারঃ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন আবিষ্কার করেছিলেন সেই ১৯৮০র দশকে। তাঁর গবেষণার ভিত্তি করে কাজের জন্য পরে তিন জন ২০০৮ সালে নোবেল পান এবং তাঁরা প্যাশনারের অবদানের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।

জুলিয়াস লিলেনফিল্ডঃ ১৯২৮ সালের তার পেপারের উপর ভিত্তি করেই ১৯৫৬ সালে বাই পোলার জাংশন ট্রানজিস্টার উদ্ভাবনের জন্য নোবেল দেওয়া হয়।

অস্কার হেইলঃ ১৯৩৬ সালেই ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টার আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর পেপারের সাহায্য এই ফিল্ড ইফেক্ট ট্রানজিস্টারের উন্নয়ন করে পরে অন্যরা নোবেল পান।

চাং ইয়াও চাওঃ (১৯৩০) তার গবেষণার উপর ভিত্তি করে পজিট্রন আবিষ্কারের জন্য ১৯৩৬ সালে অপর আরেকজন পুরস্কৃত হন।

হারম্যান ওয়াই কারঃ (১৯৫০): ব্যবহারিক এম আর আই ডিজাইন করেন যদিও তখন এটা ততটা স্বীকৃত পায়নি। ২০০৩ সালে অপর দুইজন পুরস্কার পান যারা তারই গবেষণার উপর ভিত্তি করেই আধুনিক এমআরআই ডিজাইন করেছিলেন।

যাদের নোবেল পুরস্কার দিয়ে নোবেল পুরস্কার প্রশ্নবিদ্ধঃ


হেনরি কিসিঞ্জারঃ ১৯৭৩ সালে শান্তিতে। ভিয়েতনাম যুদ্ধ খ্যাত লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী। বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায়ে তার নাম জড়িয়ে আছে।

আইজ্যাক রবিনঃ ১৯৯৪ তে শান্তিতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীর জনক। হাজার হাজার প্যালাস্টানীয় মৃত্যর জন্য দায়ী।

শিমন প্যারেজঃ ১৯৯৪ তে শান্তিতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীর জনক। হাজার হাজার প্যালাস্টানীয় মৃত্যর জন্য দায়ী।

কর্ডেল হালঃ ১৯৪৫ সালে শান্তিতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদ গন্তব্যে যাওয়া ইহুদী শরণার্থী জাহাজ জার্মানিতে ফিরিয়ে দেবার মূল কুশীলব। ওই জাহাজের অনেক মানুষ নাৎসি হত্যাকান্ডের স্বীকার।

মেনাহিম বেগানঃ ১৯৭৮ সালে শান্তিতে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীর জনক। হাজার হাজার প্যালাস্টানীয় মৃত্যর জন্য দায়ী।

তাদের কি কারণে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তা অনেকে বুঝতে পারেননাঃ

বারাক ওবামাঃ ২০০৯ সালে শান্তিতে। চামচা এবং অ্যাডমায়ারারদের অতি উৎসাহের ফল। ওবামা নিজেও নিশ্চিত নন তিনি কেন পেয়েছেন। হয়ত ভবিষ্যৎ কোন কাজের জন্য আগাম পুরস্কার প্রদান।

আল গোরঃ ২০০৭ সালে যৌথ ভাবে শান্তিতে। তিনি পরিবেশ আন্দোলনের জন্য পেয়েছেন। কিন্তু সমস্যা হল তাঁর মত আরও অনেকেই এমন আন্দোলন করছে। তাঁর সুবিধা ছিল তিনি আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাঁর অনেক অ্যাডমায়ারার ওই নোবেল কমিটির মেম্বার ছিলেন। তিনি পরিবেশ বিষয়ক একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন কিংবা প্রযোজনা করেছিলেন এবং সেখানে বর্ণনা করেছেন “পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা এবং এর সম্ভাব্য ফলাফল” যার জন্য তিনি অস্কার পান এবং পরে নোবেলও। যদিও তিনি পরিবেশ বাচাতে চান তাঁর আপন সুযোগ সুবিধার ব্যাপারটা ঠিক রেখে। তার বিরুদ্ধে অনেক গুলো অভিযোগগুলোর একটি হল তাঁর বাসভবনের বিলাস ব্যবস্থার জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুৎ অপচয় ।

ওয়াঙ্গারি মাথাইঃ ২০০৪ সালে শান্তিতে। তাঁর কথা মনে হলেই আমার আমাদের দেশের কতগুলো লোকের কথা মনে পরে যায়। যাদের বৃক্ষ রোপণ তাঁর থেকেও বেশি। তিনি মূলত তাঁর নিজ দেশে গাছ লাগানোর আন্দোলনের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। যাই হোক, তিনি আরও বিশ্বাস করেন HIV AIDS মূলত পশ্চিমা বিজ্ঞানীদের আফ্রিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র; ব্যাপারনা একটু একটু কুসংস্কার থাকতেই পারে।

জিমি কার্টারঃ ২০০২ সালে শান্তিতে। তিনিও সাবেক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। তিনি যে ঠিক কি কারণে পুরস্কার পেয়েছেন তাও অস্পষ্ট।

রিগবেরতা মেঞ্ছুঃ ১৯৯২ সালে শান্তিতে। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার উপর একটি আত্মজীবনী লিখেছিলেন। তবে সাহিত্যে না পেয়ে শান্তিতে পেয়েছেন। অন্যান্য অনেক আত্মজীবনীর মতও ওখানে টুকটাক অতিকথন ছিল। যাই হোক নোবেল কমটি তখন বিষয়টি খেয়াল করেননি।

মিখাইল গর্বাচেভঃ ১৯৯০ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন । সন্দেহ নেই তিনি পশ্চিমা দুনিয়ায় শান্তির বন্যা নিয়ে এসেছেন তবে তাঁর আপন মাতৃভূমির চরম ক্ষতি করে। তিনি আক্ষরিক অর্থেই উত্তর আমেরিকা, উত্তর এবং পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ গুলোর চিন্তা অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছিলেন। সুতরাং তাকে পশ্চিমারা শান্তি পুরস্কার না দিয়ে আর কাকে প্রদান করবে।

জন ম্যাকলোল্ডঃ ১৯২৩ সালে গবেষণা না করেই ফ্রেড্রিক ব্যান্টিঙ্গের সাথে যৌথ ভাবে চিকিৎসা শাস্ত্রে পুরুস্কৃত; একেবারে মুফতে পুরুস্কার। তিনি ব্যান্টিঙ্গকে ল্যাব ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন কিছু সময়ের জন্য।

ইয়াসির আরাফাতঃ ১৯৯৪ সালে শান্তিতে। কি শান্তি এনেছেন তা অনিশ্চিত।

নোবেল প্রাইজ ভুলঃ

কার্ল ভন ফ্রিঞ্জঃ ১৯৭৩ সালে চিকিৎসা। মৌমাছির জীবন নিয়ে একটি তত্ত্বের জন্য পুরষ্কৃত হন। তত্ত্বটি পরে ভুল বলে প্রমাণিত হয়।

এন্টোনিটয় ইগাজ মোনিজঃ ১৯৪৯ সালে চিকিৎসা। তার উদ্ভাবিত “লোবটোমি” শল্য চিকিৎসা পদ্ধতি যার জন্য পুরুস্কার পেয়েছিলেন তা পরবর্তীতে শল্য চিকিৎসায় বাতিল হয়।
জোহান ফিবজারঃ “স্পাইরোপেট্রা কারসিনোমা” নামক প্যারাসাইটের কারণে ক্যান্সার হওয়ার কারণ “আবিষ্কার” করার কারণে নোবেল পুরস্কার পান ১৯২৬ সালে চিকিৎসায়। তাঁর সেই আবিষ্কার এখন চিকিতসা সমাজে বাতিল।

এনরিকো ফার্মিঃ ১৯৩৮ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে। নিউক্লিয়ার ইরিডেশনের মাধ্যমে নতুন মৌল অবস্থানের “আবিষ্কার” করার জন্য পান যা পরে ভুল প্রমাণিত। যদিও তাঁর অন্য কয়েকটি আবিষ্কারের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারের যোগ্য ছিলেন।

স্ট্যানলি প্রুশিনারঃ ১৯৯৭ সালে চিকিৎসা। প্রাইয়োন আবিষ্কারের জন্য। এটা রোগের কারণ না অন্যান্য রোগের উপসর্গ তা এখনো বিতর্কিত।

সরকারি নিষেধাজ্ঞার জন্য যারা নোবেল প্রাইজ ঠিক সময়ে গ্রহণ করতে পারেননিঃ

নাৎসি জার্মানিতে ৪ জন বিজ্ঞানীঃ কার্ল ওসেটজকি (১৯৩৫ শান্তি), গেরহার্ড ডোমাগ (১৯৩৯ চিকিৎসা),রিচার্ড কান (১৯৩৮ রসায়ন), আয়ডোলফ বুটেনালফ (১৯৩৯ রসায়ন) এবং সোভিয়েত ইউনিঊনে বরিস প্যাস্টারনার্ক (১৯৫৮ সাহিত্য) সরাসরি সরকারি নিষেধাজ্ঞার জন্য সঠিক সময়ে পুরুস্কার গ্রহণ করতে পারেননি। তবে তাদের প্রত্যকেই বিভিন্ন ভাবে পুসুকার গ্রহণ করেছিলেন।

নোবেল প্রাইজকে যারা থোরাই কেয়ার করেছেনঃ

জন প্ল সাত্রেঃ ১৯৬৪ সালে সাহিত্যে পুরুস্কার পেয়েছিলেন কিন্তু নিতে অস্বীকার।

লি ডাক থোঃ ১৯৭৩ সালে শান্তিতে পেয়েছিলেন, তবে তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন তাঁর দেশ ভিয়েতনামে শান্তি আসেনি তাই তিনি পুরুস্কার নিতে অপারগতা দেখিয়েছিলেন।

নোবেল পুরস্কার এবং বিজ্ঞানীদের জ্ঞানময় বৈশ্বিক জোচ্চুরি এবং হঠকারিতাঃ

মেল্ভিন ক্যালভিনঃ ১৯৬১ সালে রসায়ন শাস্ত্রে। তিনি এন্ড্রু জনসন এর সাথে তাঁর যৌথ গবেষণা পত্রটি নিজনামে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করে দেন। যদিও পরে জনসনের আইনি ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর এই নীচ কৃতকর্মের কথা স্বীকার করেন এবং এন্ড্রু জনসনকে স্বীকৃতি দিতে এবং নোবেল জ্যে প্রাপ্ত অর্থের অর্ধেক তাঁকে দিতে বাধ্য হন।

সেলম্যান ওয়াকস্ম্যানঃ ১৯৫২ সালে চিকিৎসায়। তিনিও অ্যালবার্ট সার্টজ এর সাথে তাঁর যৌথ গবেষণা নিজের নামে চালিয়ে দেন। পরে আইনি লড়াইয়ে বাধ্য হন অ্যালবার্ট সার্টজ এর অবদানকে স্বীকার করে নিতে।

কার্লো রুবিয়াঃ ১৯৮৪ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে। সার্ন (CERN – ইউরোপীয় নিউক্লিয়ার গবেষণা সংস্থা) এর বিভিন্ন টিম এর একটির নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। অন্য একটি টিমকে গবেষণা প্রকাশ না করে আরও বিস্তারিত আবিষ্কারের পর তা প্রকাশ করতে অনুরোধ করেন; তারা সরল বিশ্বাসে এমন করলে তিনি নিজেই কিছুদিন পর নিজ নামে ওই একই গবেষণা পত্র আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করে দেন এবং ওটার উপরই তাঁকে নোবেল দেওয়া হয়।

গুগ্লিয়েমো মার্কনিঃ ১৯০৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে। তিনি মোট দুজন বিজ্ঞানীর সাথে জোচ্চুরি করেছেন; নিকোলাস টেসলা এবং জগদীশ চন্দ্র বসু। দুজনই তাঁর আগে রেডিও/ তারহীন যোগাযোগ ব্যবস্থার সফল ব্যবহারিক প্রদর্শন করেন। এমনকি টেসলা মার্কনির আগেই তাঁর প্যাটান্ট জমা দেন (দুঃখজনক ভাবে বসু ঐসময় প্যাটান্টে আগ্রহী ছিলেননা যদিও পরে করিয়েছিলেন)। মার্কনি তাঁর পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে টেস্লার প্যাটেন্ট আটকে দেন এবং নিজেরটা আগে পাস করিয়ে নেন। যদিও অন্যায় ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায়না। ১৯৪২ সালে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট রেডিও আবিষ্কারের প্রথম অফিসিয়াল কৃতিত্ব টেস্লাকে প্রদান করে।

নোবেল পুরুস্কার নিজেই যেখানে প্রশ্ন বিদ্ধঃ

আলফ্রেড নোবেল তাঁর উইলে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন শাস্ত্র, শরীর বিদ্যা এবং চিকিৎসা শাস্ত্র, শান্তি এবং সাহিত্য পুরস্কার দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন। অর্থনীতির কথা তিনি কোথাও উল্লেখ করেননি। ১৯৬৯ সালে সুইডিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইচ্ছায় অর্থনীতিতেও “নোবেল পুরস্কার” দেওয়া শুরু হয়। তখন এর নাম দেওয়া হয়েছিল “আলফ্রেড নোবেলের তরে উৎসর্গীকৃত স্মৃতি পুরস্কার”। এর পরে আরও ৮ বার এর নাম পরিবর্তন করা হয়। এবং বর্তমান নাম “আলফ্রেড নোবেল স্মৃতি ভ্যারিজ রিকজ ব্যাংক অর্থনীতি পুরস্কার”। এছাড়া নোবেলের পরিবারের উত্তরসূরি আইনজীবী পিটার নোবেল অর্থনীতিতে পুরস্কার দেওয়ার সমালোচনা করে বলেছিলেন এটা “নোবেল” পরিবারের পারিবারিক নামের অপব্যবহার। অন্যান্য ৫ টি ক্ষেত্রে পুরস্কারকে শুধু “নোবেল পুরস্কার” হিসেবে পরিচয় দেওয়া হয়।

আবার উল্টো ভাবে বললে, অনেকে সমালোচনা করেন, গণিতের জন্য কোন নোবেল পুরস্কার নেই এবং এই বিষয়ে দেওয়া উচিত।

পুনশ্চঃ

অর্থনীতির পুরস্কারের সবচাইতে বড় অভিযোগ হল এক্ষেত্রে শুধু পশ্চিমা ম্যাক্রো পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে গবেষণার জন্য এটা দেওয়া হয়।

নোবেল নিয়ে সবচাইতে বিতর্ক শান্তি এবং সাহিত্য তে পুরস্কার নিয়ে।শান্তি পুরস্কার আক্ষরিক অর্থেই পশ্চিমাদের “খুশি এবং সান্ত্বনা” পুরস্কারে রূপান্তরিত হয়েছে এবং ব্যাপক রাজনৈতিক দোষে দুষ্ট।

সাহিত্য পুরস্কার অনেক অর্থে তার সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। অনেক অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিক এই নোবেল শান্তি পুরস্কার পাননি। আবার এমন অনেক লেখক পেয়েছেন যার কারণ অনেক সাহিত্যিক সমালোচকরা খুঁজে পাননা।

শরীর বিদ্যা এবং চিকিৎসা শাস্ত্রে অনেক সময় প্রি ম্যাচিউড় পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এবং ডিসার্ভিং ব্যক্তি পুরস্কার পাননি ।

পদার্থ বিজ্ঞান এবং রসায়ন শাস্ত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারে পুরস্কার দেওয়া হয়নি এবং এখানেও অনেক ডিসার্ভিং ব্যক্তি পুরস্কার পাননি। সবচাইতে বড় অভিযোগ এখানে সিংহভাগ পুরস্কার আবিষ্কারের (ডিসকভারি) জন্য দেওয়া হয়; খুব কম ক্ষেত্রীই উদ্ভাবনের (ইনভেনশন) জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

----------------------------------------XXXXX------------------------------------------------

 প্রবন্ধটি ২২ শে জুন, ২০১২ সালে সমহোয়্যার ইন ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল।

No comments:

Post a Comment